পূর্বধলায় বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট; মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হাসপাতালে

নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামের আলামিন গংদের নেতৃত্বে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী কে আহত করে বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রাবেয়া খাতুন (৭০) পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মঙ্গলবার (১৭ই মে) সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর পরই এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী মোঃ বাচ্চু মিয়া ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মোস্তফা করিম মুকুল এবং মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রাবেয়া খাতুন বলেন, গত প্রায় এক বছর ধরে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিষয়ে গ্রাম্যসালিস, আদালতে মামলা এবং থানায় অভিযোগ দিলে মামলার আয়ু কাগজপত্র নিয়ে থানায় উপস্থিত থাকার কথা বললে আলামিন গংদের কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। গতকাল জোর পূর্বক আলামিন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জায়গায় ঘর উঠিয়ে ফেলে এই বিষয় নিয়ে বিকালে কথা কাটাকাটি হলে সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের নামাজের পরপরই আলামিন(৩২) পিতা-মৃত আব্দুর রশিদ, এনামুল, হেলিম আব্দুর রহিম, আনোয়ারা বেগম সহ ১০-১২জন সন্ত্রাসী বাহিনীর সংঘবদ্ধচক্র অতর্কিতভাবে হামলা ও ভাংচুর এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটায়।
মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রাবিয়া খাতুন অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জোরপূর্বক আলামিন তার বাড়িতে ১১-১২ জন সন্ত্রাসী নিয়ে হামলা চালিয়েছেন। এ সময় তারা ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও বাড়িতে থাকা বিভিন্ন মালামাল ও মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রাবিয়া খাতুনকে মারধর করে হজে যাওয়ার জন্য জমানো ট্রাংকের ভিতর থাকা তিন লক্ষ টাকা জোর করে ছিনিয়ে লুটপাট করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মোস্তফা করিম মুকুল বাদী হয়ে আলামিন সহ ৫জনের নাম উল্লেখ করে পূর্বধলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মোস্তফা করিম মুকুল জানান, আলামিন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কমল কৃষ্ণ সরকারের বাড়িতে কাজ করে, ইউপি চেয়ারম্যান মদদে আমাদের জায়গায় ঘর উঠিয়েছে এবং তার শক্তিতেই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ এ পর্যন্ত কোনও আসামিকে গ্রেপ্তার করেনি। তারা তাকে ও তার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। এ অবস্থায় জানমালের নিরাপত্তা না থাকায় মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা।
এবিষয়ে খলিশাউড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কমল কৃষ্ণ সরকারের সাথে কথা বললে তিনি জানান মিমাংসার লক্ষ্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এবিষয়ে রাতেই একটি মামলা দায়ের হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।